বিসিএস নাকি ব্যাংকের জন্য জন্য প্রস্তুতি নিবেন ?
অনেকেই দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন ব্যাংকের প্রিপারেশন নিবেন নাকি বিসিএসের? তবে আমি মনে করি একটু বুদ্ধি খাটালে একসাথে বিসিএস ও ব্যাংক উভয়েরই প্রিপারেশন নেওয়া যায়।
বিসিএস ক্যাডার বা ভালো সরকারি চাকরি এমন একটা জিনিস যা আপনার পুরো জীবনকে পালটে দিতে পারে। যারা আজ আপনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে হেয় প্রতিপন্ন করছে, আপনি বিসিএস ক্যাডার হলে তারাই প্রথমে আপনাকে অভিনন্দন জানাবে, তারাই বেশি আপনার প্রশংসা করবে।
এখানে আমি আগেই বলে রাখি যে, বিসিএস এর জন্য প্রচুর ধৈর্য ও পড়াশোনার প্রয়োজন। তারপরও আমি বলবো আপনি প্রথমত বিসিএসেরই প্রিপারেশন নিন।
কেননা, আমার অনেক কাছের বন্ধু-বান্ধব, বড় ভাই, ছোট ভাইকে দেখেছি যারা চাকরির জন্য অনেক পড়েছে কিন্তু কোনো চাকরি হয়নি ; কিন্তু শেষে দেখা গেছে তার জীবনের প্রথম চাকুরিটাই হলো বিসিএস ক্যাডার হিসেবে।
আবার অনেককে এমন দেখেছি যারা ভালো করে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়াতে বিসিএস ক্যাডার না হতে পারলেও ভালো সরকারি চাকরি পেয়েছে কিংবা ব্যাংকে জব হয়েছে। এই জন্য বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতিকে বলা হয় “Mother of All Jobs Preparation”.
বিসিএসের প্রিপারেশন নিলে একসাথে অনেক জবের প্রিপারেশন হয়ে যায়। তাছাড়া এখন কেউ যদি বিসিএসে প্রিলি, রিটেন, ভাইভা পাশ করার পরও কোনো ক্যাডার না পান, তাহলে একটা নন-ক্যাডার জব পাবেন বলে আশা করতে পারেন (৩৩তম, ৩৪তম ও ৩৫ তম বিসিএস থেকে অনেকে নন-ক্যাডারে ভালো জব পেয়েছে), পিএসসিএর ২০১২ সালের নন-ক্যাডার নিয়োগ নীতিমালা এই জন্যই মূলত প্রণয়ন করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো, আপনি কেন ব্যাংক বা পিএসসির নন-ক্যাডার এর প্রস্তুতি বাদ দিয়ে কেবল বিসিএসের প্রিপারেশন নিবেন?
উত্তর: এখানে অনেক লাভ আছে, তাই নিবেন।
১। আমি মূলত বিসিএসের প্রিপারেশন নিয়ে পূবালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে চাকরি করেছি। আপনিও পারবেন চেষ্টা করেই দেখুন না!
বিসিএস প্রিলিতে শর্টকাট পাশের জন্য আপনাকে অনেক বেশি সাহায্য করবে “BCS Preliminary Analysis” বইটি।
তবে আমি ব্যাংকের জন্য এক্সট্রা শুধু কিছু English Version-এর ম্যাথ করেছি, Saifur’s Analogy বইটি পড়েছি এবং ICT উপর একটু ভালোভাবে পড়াশোনা করেছি। আর English Vocabulary এর উপর বেশি জোর দিয়েছি (মূলত Saifur’s Vocabulary-টা শেষ করেছিলাম)। তাতেই হয়ে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ্ ।
এখন আবার আমি সবার দোয়া ও আল্লাহর রহমতে ৩৫তম বিসিএস ক্যাডার হয়েছি। যদিও ৩৪ তম বিসিএস ছিল প্রথম বিসিএস, সেখানে নন-ক্যাডারে নিয়োগে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলাম আর ৩৫তম ছিল আমার দ্বিতীয় বিসিএস।
২। নন-ক্যাডারের জন্য আপনাকে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে না।
৩। ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বাতিল হয়ে যাওয়াতে “কোটাবিহীন বিসিএস” প্রার্থীর BCS ক্যাডার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। আবার, BCS প্রিলি, রিটেন, ভাইভা পাশ করলে ক্যাডার না পেলে অন্তত একটা ফার্স্ট ক্লাস বা সেকেন্ড ক্লাস নন-ক্যাডার পেয়ে যেতে পারেন। (আগে এই ক্ষেত্রেও কোটা প্রয়োগ করা হতো, এখন আর কোটা প্রয়োগ হবে না!)
৪। কোনো প্রকার ঘুষ, তদবির ছাড়াই আপনি অনেক ভালো একটা সরকারি অফিসার হওয়ার অপার সম্ভাবনা!
৫। ব্যাংকের জবের জন্য বেশি পেরেশানি হতে হবে না।
*আর যাদের হাতে সময় কম বা চাকরিজীবী কিংবা এত বেশি বই পড়তে পারেন না কিন্তু “BCS ক্যাডার” প্রস্তুতি নিতে চান, তারা “BCS Preliminary Analysis” বইটি পড়লে অনেক উপকার পাবেন। কেননা, এই এক বইয়ে বিসিএস সব বিষয় অর্থাৎ ১২টি বিষয় একসাথে গোছানো আকারে পাবেন। এই বইয়ে কোনো অপ্রয়োজনীয় তথ্য নেই। বইটি আমার বিসিএস জীবনের দীর্ঘ ৫ বছরের অভিজ্ঞতা, নোট ও সাজেশন দিয়ে রচিত।
*মনে রাখবেন, “কম পড়বেন কিন্তু Important বিষয়গুলো পড়বেন!” প্রিলির জন্য ২০০তে ১৮০-৯০ পাওয়া লাগে না ; ১২০ নম্বর পেলেই পাশ নিশ্চিত!
.
*শুধু “BCS Preliminary Analysis” বইটি + প্রিলি প্রশ্নব্যাংক + আপডেট থাকার জন্য “কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স” পড়লেই ইনশাল্লাহ অল্প পড়েও বিসিএস প্রিলি পাশ করতে পারবেন। কিন্তু বেশি বেশি জানার জন্য বেশি বেশি পড়ার বিকল্প নেই।
__________________________________
©©© গাজী মিজানুর রহমান
***৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার