প্রাচীন বাংলার ইতিহাস ও বাঙালি জাতির উৎপত্তি ।
হ্যালো 😍
আপনার শুনে খুশি হবেন যে এখন থেকে সাধারণ জ্ঞানের প্রতিটি টপিক ধারাবাহিক ভাবে পোস্ট করা হবে এবং পোস্টের শেষে সেল্ফ টেস্টের ব্যবস্থা ও রাখা হয়েছে। যেখান থেকে আপনারা নিজেদের যাচাই করার সুযোগ পাবেন।
আজ আমরা পড়বো বাঙালি জাতির উৎপত্তি সম্পর্কে।
✍এটি শুধু সাধারণ জ্ঞানের টপিক তা নয় বরং বাংলা তে ও এটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়।
কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় চলে যাচ্ছি।
🌓 প্রথমেই আমরাসমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠীকে ভাগ করবো।
এক্ষেত্রে দুইটা ক্যাটাগরি হবে
১. প্রাক আর্য বা অনার্য জনগোষ্ঠী
২.আর্য জনগোষ্ঠী।
এখন আর্যপূর্ব জনগোষ্ঠীকে আবার ৪ টি ভাগে ভাগ করা যায়।
১ক. নেগ্রিটো
১খ. অস্ট্রিক
১গ. দ্রাবিড় ও
১ঘ. ভোটচীনীয়-
✍কেউ কেউ তাদের ‘নিষাদ জাতি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
এবার এদের ক্রমবিকাশটা দেখে নেই৷
✍ ধারণা করা হয় আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে ইন্দোচীন থেকে আসাম হয়ে বাংলায় প্রবেশ করে অস্ট্রিক জাতি। এবং তারপর অস্ট্রিকরা বাংলায় বিদ্যমান নেগ্রিটোদের উৎখাত করে।
✍ অস্ট্রিক জাতির সমকালে দ্রাবিড় জাতির সঙ্গে মঙ্গোলীয় বা ভোটচীনীয় জাতির সংমিশ্রণ ঘটে। গারো, ত্রিপুরা, চাকমা ইত্যাদি মঙ্গোলয়েড।
✍ অস্ট্রিক দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর মিশ্রণে যে জাতির প্রবাহ চলছিল, তার সঙ্গে আর্য জাতি এসে যুক্ত হয়ে গড়ে তুলেছে বাঙালি জাতি।
এবার আর্যদের সম্পর্কে জেনে আসি।
✍ আর্যদের আদিনিবাস ছিল ইউরাল পর্বতের দক্ষিণে বর্তমান মধ্য এশিয়ার ইরানে।
✍ আর্যরা সনাতনী ধর্মাবলম্বী ছিল।
✍ তাদের ধর্মগ্রন্থের নাম ছিল বেদ।
এবার আমরা প্রাচীন বাংলার জনপদগুলো সম্পর্কে জানবো।
👉 প্রথমেই বলে রাখি প্রাচীন যুগে বাংলা বলতে বর্তমানের বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গকে বুঝানো হয়।
✍ প্রাচীনকালে এখনকার বাংলাদেশের মতো কোনো একক ও অখণ্ড রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিল না।
✍ বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে বিভক্ত ছিল।
✍ আর প্রতিটি অঞ্চলের শাসক যার যার মতো শাসন করতেন।
✍ বাংলার এ অঞ্চলগুলোকে তখন সমষ্টিগতভাবে নাম দেওয়া হয় জনপদ।
একনজরে জনপদগুলোর বর্তমান অবস্থা দেখে নেই৷
প্রাচীন জনপদ – বর্তমান অবস্থা
⏺ পুণ্ড্র – বৃহত্তর বগুড়া (মহাস্থানগড়), রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল।
⏺ বরেন্দ্র – রাজশাহী বিভাগের উত্তর-পশ্চিমাংশ, বগুড়ার পশ্চিমাংশ রংপুর ও দিনাজপুরের কিছু অংশ
⏺ বঙ্গ – বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চল।
⏺ সমতট – বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চল।
চন্দ্রদ্বীপ – বরিশাল, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, খুলনা ও গোপালগঞ্জ।
⏺ গৌড় – মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
⏺ শ্রীহট্ট – সিলেট অঞ্চল।
⏺ হরিকেল – চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পার্বত্য সিলেট অঞ্চল
⏺ তাম্রলিপি – হরিকেলের উত্তরে বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুকিই ছিল তাম্রলিপির প্রাণকেন্দ্র।
⏺ রাঢ় – বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার দক্ষিণ অংশে ছিল রাঢ়ের অবস্থান। রাঢ়ের আরেক নাম ছিল সুক্ষ্ণ।
এবার জনপদ সম্পর্কে যে তথ্যগুলো অনেকবার পরীক্ষায় এসেছে তা দেখবো।
✍ জনপদগুলোর মধ্যে প্রাচীনতম হলো পুণ্ড্র।
✍ ঐতরেয় আরণ্যক গ্রন্থে সর্বপ্রথম ‘বঙ্গ’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়।
✍ মোগল সম্রাট আকবরের সভাকবি আবুল ফজল তাঁর ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থে সর্বপ্রথম দেশবাচক বাংলা শব্দ ব্যবহার করেন।
✍ তিনি ‘বাংলা’ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে দেখিয়েছেন যে, এ দেশের প্রাচীন নাম ‘বঙ্গ’ – এর সঙ্গে বাঁধ বা জমির সীমানাসূচক ‘আল’ প্রত্যয়যোগে ‘বাংলা’ শব্দ গঠিত হয়।
✍ পাণিনির গ্রন্থে সর্বপ্রথম ‘গৌড়ের’ উল্লেখ পাওয়া যায়।
✍ কালিদাসের গ্রন্থে ‘বঙ্গ’ জনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়।
✍ প্রাচীন শিলালিপিতে ‘বিক্রমপুর’ ও ‘নাব্য’ নামে বঙ্গের দুটি অঞ্চলের নাম পাওয়া যায়। বর্তমান ফরিদপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালীর নিম্ন জলাভূমি ছিল ‘নাব্যের’ অন্তর্ভুক্ত।
✍ পুণ্ড্রদের রাজধানীর নাম ছিল পুণ্ড্রনগর। পরবর্তীকালে এই পুণ্ড্রনগরই মহাস্থানগড় (পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী) নাম ধারণ করে।
✍ ১৮০৮ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিলটন প্রথম মহাস্থানগড়ের অবস্থান চিহ্নিত করেন।
✍ ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার কানিংহাম প্রথম এটিকে পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানীরূপে চিহ্নিত করেন।
✍১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে ‘পুণ্ড্রনগর’ বা ’মহাস্থানগড়ে’ প্রত্নতাত্ত্বিক খননে সন্ধান মেলে ব্রাহ্মীলিপির।
✍ সমতটের রাজধানী ছিল ‘বড় কামতা’।
এতক্ষণ আপনারা কতটুকু মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন তার জন্য এখন সেলফ টেস্টের ব্যবস্থা করেছি।
১.সমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠীকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. ২
খ. ৩
গ. ৪
২. আর্যদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ ছিল?
ক. ত্রিপিটক
খ. বেদ
গ. বাইবেল
৩. সর্বপ্রথম বঙ্গ শব্দ পাওয়া যায়?
ক. ঐতরেয় আরণ্যক
খ. আইন-ই-আকবরী
গ. বেদ
৪. বরেন্দ্র জনপদ বুঝায়?
ক. ঢাকা
খ. ময়মনসিংহ
গ. রাজশাহী
৫. সমতটের রাজধানী ছিল?
ক. পুন্ড্রনগর
খ. ঢাকা
গ. বড় কামতা
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন৷
Syed Sakib Alam
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই ওয়েবসাইটের কোনো কনটেন্ট অন্য কোন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। ইতিমধ্যে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। কেউ এই ওয়েবসাইটের কনটেন্ট কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।